গাংনী :
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা ভুমি অফিসে পদে পদে ঘুষ-দুর্নীতির কারণে এখানে অনিয়মই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। এতে করে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা। অবৈধ লেনদেনকে ঘিরে এই অফিস কেন্দ্রিক শক্তিশালী দালালচক্রও গড়ে উঠেছে।
আর সহকারী কমিশনার ভুমি সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে ইচ্ছেমত অফিস করা, ভুমি মালিকদের হয়রানি ও অসৌজন্য মুলক আচরনের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া মাসের পর মাস নামজারি সহ নানা ফাইল পড়ে থাকায় দূর্ভোগ বেড়েছে ভুমি মালিক ও সেবা প্রত্যাশীদের। দ্রত সময়ের মধ্যে নামজারি সহ কাজে গতি আনতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছে ভুক্তভুগীরা।
গাংনী মহিলা ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক হারুন অর রশিদ রবি বলেন,অদক্ষ লোক দিয়ে গাংনীর মত বড় একটি উপজেলা চালানো সম্ভব নয় তাই এসিল্যান্ডকে প্রত্যাহার করে দক্ষ লোক দেওয়ার দাবি করেছেন তিনি।
তিনি আরো বলেন,কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত, খতিয়ানের ভুল সংশোধন, নামজারি আপত্তি-নিষ্পত্তি, দেওয়ানি আদালতের রায় বা আদেশমূলে রেকর্ড সংশোধন, ভূমির শ্রেণি পরিবর্তনের আবেদন নিষ্পত্তি, কেসের আদেশের নকল বা সার্টিফায়েড কপি নিতে ভুমি মালিকরা সীমাহীন দূর্ভোগে পড়েছে।
বাংলাদেশ টেলিভিশনের সিনিয়র সঙ্গীত শিল্পি ও পরিচালক আশরাফ মাহমুদ বলেন,ভুমি সংক্রান্ত একটি শুনানী রয়েছে। দুপুর ১২ টায় সময় দিলেও বিকাল ৩ টা বেজে গেছে শুনানীর কোন খবর নেই। ইতোপূর্বে কয়েকবার সারাদিন বসিয়ে রেখে সন্ধ্যায় বলেছে শুনানী হবেনা। এই দূর্ভোগের হাত থেকে রক্ষার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সাহারবাটি ইউনিয়নের বাসিন্দা একজন পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) বলেন,তাদের একটি জমি অন্যজন নামজারি করে দিয়ে গেছে। সেই নামজারি বাতিল করার জন্য দীর্ঘদিন ভুমি অফিসে ঘুরেও কোন কাজ হয়নি। পরে দালালের মাধ্যমে কাজটি সমাধান করা হয়েছে।
জানা গেছে,বিগত বছরে প্রতিমাসে প্রায় ৩ হাজার নামজারি সম্পন্ন করা হতো সহকারী কমিশনার সাদ্দাম হোসেনের যোগদানের পর থেকে প্রতি মাসে ৭ থেকে ৮শত নামজারি করা হচ্ছে এতে দূর্ভোগে পড়েছে ভুমি মালিকরা। এদিকে নামজারী না থাকার কারনে জরুরী প্রয়োজনেও ভূমি রেজিস্ট্রিও করতে পারছে না অনেকে।
সহকারী কমিশনার সাদ্দাম হোসেন তার ইচ্ছেমত অফিস করার ফলে নামজারি সহ ভুমির কাজের ফাইলের স্তুুপ বাড়ছে। দ্রত সময়ের মধ্যে নামজারি সহ অন্যান্য কাজ করতে জমি মালিকদের অনেককেই দালালের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে।
পৌর শহরের শিশিরপাড়া গ্রামের রহমত উল্লাহ জানিয়েছেন, প্রতিপক্ষেল কাছে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে এসিল্যান্ড অফিস থেকে জারি করা নোটিশ তাকে না দিয়ে গায়েব করা হয়েছে। একারনে তার নামজারি বাতিল করেছে। পরবর্তীতে দিনের পর দিন ঘুরে আপিল করা হয়েছে। অবিলম্বে এসিল্যান্ড অফিসের অনিয়ম দূর্নীতি ও হয়রানী বন্ধ করতে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।
দলিল লেখক সমিতির সদস্যরা জানিয়েছেন,নামজারি একেবারে কম হওয়ার কারনে দলিল রেজিষ্টিও কম হচ্ছে। একারনে মুহুরাদের কাজ নেই বললেই চলে। তাই দ্রত নামজারি করার দাবি করেছেন।
এবিষয়ে কথা বলতে তার অফিসে গেলে তিনি কথা বলতে রাজি হয়নি সহকারী কমিশনার ভুমি সাদ্দাম হোসেন।
হয়রানীর ঘটনা ঘটে থাকলে ভবিষ্যতে আর হয়রানীর ঘটনা না ঘটে তার জন্য আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ।
ইচ্ছেমত নামজারি ও অফিস করেন গাংনীর এসিল্যান্ড। ভেঙ্গে পড়েছে ভুমিসেবা
পূর্ববর্তী পোস্ট