গাংনী নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম :
একটি দূর্ঘটনা কেড়ে নিলো দুটি পরিবারের সপ্ন। ছেলেদের মৃত্যু’র শোকে পাথর তাদের বাবা মা সহ পরিবারের সদস্যদের। রবিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় উপজেলার বামুন্দী পশুহাট এলাকায় মটরসাইকেল ও ট্রাকের সংঘর্ষে বজ্রপুর গ্রামের আকরাম হোসেনের ছেলে মকবুল হোসেন (২৯) ও তার বন্ধু চরগোয়ালগ্রামের আওয়াল হুজুরের ছেলে আক্তারুজ্জামান (২৮) নিহত হয়।
নিহত আক্তারুজ্জামানের চাচা আব্দুল মান্নাফ মাষ্টার জানান,তার ভাই আব্দুল আওয়ালের দুটি ছেলে একজন আক্তারুজ্জামান আরেকজন সাহিবুল ইসলাম। আব্দুল আওয়াল পেশায় কৃষক হলেও দুটি ছেলেকে নিয়ে বড় সপ্ন ছিলো। কিন্তুু একটি দূর্ঘটনা কেড়ে নিলো সেই সপ্ন। আক্তারুজ্জামান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা শেষ করেছে আর তার ছোট ভাই ঢাকা কলেজে অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র। আক্তারুজ্জামানের সপ্ন ছিলো বিসিএস ক্যাডার হয়ে বাবা মা সহ এলকার মুখ উজ্জল করা। তার বাবা মা জমি বিক্রি করে কখনও অনাহারে কখনও অর্ধাহারে থেকে অনেক কষ্ট করে দুটি কুঁড়ি থেকে ফুল ফুটানোর চেষ্টা করলেও ঘাতক ট্রাক কেড়ে নিলো সন্তান সহ পরিবারের সপ্ন। সন্তান হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে হয়ে পড়েছে তার বাবা মায়ের। মকবুল হোসেনের মৃত্যু’র মধ্যে দিয়ে আর যেন কোন মা বাবার কোল খালি না হয় এজন্য সরকারকে দূর্ঘটনা রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের।
মকবুল হোসেনের প্রতিবেশী স্কুল শিক্ষক জয়নাল আবেদীন জানান,মকবুল হোসেনের বাবা আকরাম হোসেন পেশায় একজন কৃষক। ৪ ভাইয়ের মধ্যে মকবুল হোসেন ২য়। বড় ও সেজো ভাই রাজমিস্ত্রির কাজ করে। আর ছোট ভাই বিদেশে রয়েছে। মকবুল হোসেনের মেধা ভালো থাকার কারনে জমি ও শ্রম বিক্রি করে তাকে মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তোলার জন্য পড়াশুনা করিয়েছেন। অভাব অনটন থাকার পরও কোন দিন ছেলেকে অভাব অনটন বুঝতে দেননি। ছেলে পড়াশুনা শেষ করে চাকুরী করবে এমন সপ্ন থাকলেও ট্রাক দূর্ঘটনায় সেই সপ্ন কেড়ে নিলো। মেধাবী এই ছেলের মৃত্যুতে শোকের ছাড়া পড়েছে গোটা পরিবারে। কোন ভাবেই কান্না আর বিলাপ থামছেনা তার বাবা মায়ের। নিহতের স্বজনা জানিয়েছেন,মকবুল হোসেন ও আক্তারুজ্জামানকে তাদের নিজ নিজ গ্রামের কবর স্থানে রাতে দাফন করা হয়েছে।
গাংনী থানার ওসি মো: ওবাইদুর রহমান জানান, মকবুল হোসেন ও আক্তারুজ্জামান নিহত হওয়ার ঘটনায় ড্রাইভার রাজুর নামে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ১০৫ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং ২ তাং ০২.০৮.২০২০ ইং। দূর্ঘটনার পর থেকে ট্রাক চালক পলাতক থাকলেও পুলিশ ট্রাক জব্দ করেছে। আসামী রাজুকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। মেহেরপুর ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে দূর্ঘটনা রোধে কি ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানার জন্য মেহেরপুরের ট্রাফিক পুলিশের ওসি ইসমাইল হোসেনের সরকারী মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করেনি। এদিকে মেহেরপুর জেলায় দিনদিন অবৈধ যানবাহনের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও কোন ব্যস্থা না নেওয়ায় প্রকট আকার ধারন করেছে।