বয়স তাঁর মোটে ৩৫ বছর। সামনে এখনো বাকি এক লম্বা জীবন। কিন্তু নানা সমস্যায় জীবনের প্রতি বিন্দুমাত্র আগ্রহও হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি, বেছে নিতে চেয়েছিলেন স্বেচ্ছামৃত্যুর (ইউথানেসিয়া) পথ। এ জন্য দেশের সরকারের কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি পেতে চিঠি লিখে তিনি আবেদন জানান।
এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের মহারাষ্ট্রে। ক্যারিয়ার খারাপ হওয়ায় ও বিয়েসংক্রান্ত জটিলতার কারণে ওই প্রদেশের এক ব্যক্তি মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের দপ্তরে চিঠি লিখে স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য আবেদন করেছেন। ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানাচ্ছে, ওই ব্যক্তির ক্যারিয়ার অস্থিতিশীল। এ ছাড়া বিয়ের কোনো সম্ভাবনাও তিনি দেখছিলেন না। এতে হতাশ হয়ে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নেন।
মহারাষ্ট্র প্রদেশের দত্তওয়ারি থানার জ্যেষ্ঠ পুলিশ পরিদর্শক দেবিদাস ঘেওয়ারে ওই চিঠির বরাতে বার্তা সংস্থা এএনআইকে বলেন, চিঠিটি বিশ থেকে পঁচিশ দিন আগে পাঠানো হয়েছিল। চিঠি থেকে তাঁরা জানতে পেরেছেন, মা–বাবার জন্য কিছু করতে চেয়েও ওই ব্যক্তি তা পারছিলেন না। অন্যদিকে নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। বিয়ে করতে পারবেন এমন কোনো সম্ভাবনাও দেখছিলেন না তিনি। সবকিছু মিলিয়ে চরম হতাশ হয়ে স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি চান তিনি। তবে এখন ওই ব্যক্তি ঠিক আছেন বলে জানান দেবিদাস ঘেওয়ারে।
পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, চিঠিতে ওই ব্যক্তি তাঁর অসুস্থ বৃদ্ধ বাবা-মায়ের কথা উল্লেখ করেছেন। ওই ব্যক্তি লিখেছেন, তাঁর মায়ের বর্তমান বয়স প্রায় ৭০ এবং বাবার বয়স ৮৩ বছর। কিন্তু মা–বাবার জন্য তেমন কিছুই করতে পারছিলেন না তিনি। দেবিদাস বলেন, ওই ব্যক্তিকে উপযুক্ত পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা দেবিদাস ঘেওয়ারে বলেন, ‘ওই ব্যক্তি সচ্ছল পরিবার থেকে এসেছেন। তিনি সুশিক্ষিত। বিয়ে করতে পারছেন না বলেই যে তিনি শুধু হতাশ, বিষয়টা এমন নয়। তিনি মা-বাবাকে প্রচণ্ড ভালোবাসেন।’
স্বেচ্ছামৃত্যু নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা ধরনের আইন চালু আছে। সাধারণত অসুস্থতার কারণে জীবনসংকটে থাকা রোগীদের পশ্চিমের বিভিন্ন দেশে স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু এ নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই।