গাংনী নিউজ টােয়েন্টিফোর ডটকম :
মেহেরপুরের গাংনীতে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় গাংনী পৌর শহরের বাঁশবাড়িয়া গ্রামে উপজেলা শিক্ষক কর্মচারী সমিতির কার্যালয় চত্তরের জমি শিক্ষক নেতৃবৃন্দ দখল মুক্ত করতে গেলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকোলে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কে সাময়িক বাসচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আহতরা হলেন,শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আফজাল হোসেন,রাকিবুল ইসলাম,রহিদুল ইসলাম,হিজলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আলমগীর হোসেন মিঠু,মিকুশিশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বদিউজ্জামান,শাহিন,আরবিজিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইমরান হোসেন। অপর পক্ষের আহতরা হলেন,বাঁশবাড়িয়া গ্রামের ইয়াদ আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম,হাবিবুর রহমানের ছেলে মোজাম্মেল হক,ছাবদার আলীর মেয়ে সুমাইয়া খাতুন,হাবিবুর রহমানের ছেলে নিজাম উদ্দীন,হাবিবা খাতুন,সোহেলী খাতুন,মাছুরা খাতুন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে
জমির মালিকানা দাবি করে হাবিবুর রহমানের ছেলে কুতুবুদ্দিন জানান, গাংনী পৌর এলাকার বাঁশবাড়িয়া-৪৭ মৌজার ২৭২৭ খতিয়ানের ৪৭৮ দাগের ১৫.৭৫ শতক জমি এর মধ্যে ১৯৮২-৮৩ সালের দিকে আমার আমার দুই ফুফু রাহেলা খাতুন ও যায়তুন খাতুন এর কাছ থেকে তার পিতা ১০.৫০ জমির ক্রয় করেন এবং পৈত্রিক সূত্রে ৫.২৫ শতক জমি পায়। এই জমি আমরা নিয়মিত খাজনা-খারিজ দলিল মূলে দিয়ে আসছি কিন্তু ১৯৯৬ তাহলে আমরা জমিতে বিক্রি করার জন্য জনৈক্য ইব্রাহিম মন্ডলের কাছে বায়না করলেও জমি আর বিক্রি করি নাই। বায়না নামা ধরে ইব্রাহিম ভুয়া দলিল তৈরি করে শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ সদস্যদের কাছে ১৯৯৭ জমিটি বিক্রি করেন। সেই দলিলের সূত্র ধরেই শিক্ষক ও কর্মচারীরা জমিটা নিজেদের বলে দাবি করছেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও পেশি শক্তির বলে হিজলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান মনি মাষ্টারের নেতৃত্বে ক্যাডার বাহিনী আমাদের জমি থেকে উচ্ছেদ করতে গেলে আমরা বাঁধা দিলে মহিলা সহ অন্তত ১০ জনকে পিটিয়ে আহত করে এবং আমাদের ঘরবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আফজাল হোসেন,গাংনী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড বাঁশবাড়ীয়া গ্রামে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ সমিতির নিজস্ব জমি ও স্থায়ী ভবন রয়েছে। যেখানে একটি হলরুম ও দুটি পাশাপাশি রুম রয়েছে। সীমানা প্রাচীর দিয়েও আমাদের শিক্ষক ও কর্মচারীদের সেই সম্পদ ২৭ বছর ধরে ঘেরা রয়েছে।
দীর্ঘদিন আগে ১৯৯৭ সালে এই জমিটি বিক্রয় কবলা সূত্রে ইব্রাহিম মন্ডলের কাছ থেকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ সমিতি ক্রয় করে। এই জমির প্রথম মালিক হাবিবুর রহমান জমিটি বিক্রি করেন মহসিন আলীর কাছে। মহসিন আলী বিক্রি করে নুরুল হুদার কাছে। নুরুল হুদা বিক্রি করে ইব্রাহিম মন্ডলের কাছে। পরে ইব্রাহিম মন্ডলের কাছ থেকে আমরা জমিটি ক্রয় করি। ১৯৯৭ সাল থেকে জমিটি আমাদের আয়ত্তে রয়েছে এবং এখান থেকেই আমরা আমাদের সমস্ত কার্যক্রম পরিচালনা করি। কিন্তু হঠাৎ করেই জায়গাটি দখল করে নেয়। জায়গা দখল মুক্ত গেলে শিক্ষক নেতৃবন্দের উপর হামলা করে বেশ কয়েকজনকে আহত করে।হিজলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান মনি মাষ্টার লুটপাটের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেন।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেন সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে তিনি সহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনা স্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনা হয়।
তিনি বলেন, জমিজমার বিষয়টি আদালত ফয়সালা করবে। কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না। সংঘর্ষের ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে সংঘর্ষের খবর পেয়ে গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ খালেক ও পৌর মেয়র ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সকলকে শান্ত থাকার আহবান জানান।