গাংনী হাসপাতালের ৪র্থতলায় রুগীর বেড। দূর্ভোগ দেখার কেউ নেই

কর্তৃক farukgangni

ফারুক আমেদ,গাংনী নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম :

নানা সমস্যায় জর্জরিত মেহেরপুরের গাংনী হাসপাতালটি। হাসপাতালটিতে ডাক্তার ও জনবল সংকট প্রবল আকার ধারন করেছে। সেবার মান বাড়াতে ও ডাক্তার পদায়নে তেমন কোন উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের। তবুও ডাক্তার ও নার্সরা প্রানপণ চেষ্টার পরও সেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছে। রুগী ও তার স্বজনারা জানান,গাংনী হাসপাতালে সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও প্রধান সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে হাসপাতালের ৪র্থ তলায় রুগীর বেড তৈরি করে চিকিৎসা প্রদান। একজন রুগীকে নীচতলা থেকে ৪র্থ তলায় উঠাতে যেমন হিমিসিম খেতে হয় তেমনই দোকান থেকে বারবার ওষধ পত্র আনতেও কষ্টের শেষ থাকেনা রুগীর স্বজনদের। রাতের আধাাে একজন রুগীকে নীচতলা থেকে উপরে উঠানোর জন্য কোন লোকবল পাওয়া যাইনা। একারণে চরম দূর্ভোগে পড়তে হয় রুগী ও তার স্বজনদের। এছাড়া তীব্র গরমে ৪র্থ তলায় থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে রুগী ও তার স্বজনদের। কর্তব্যরত কয়েকজন চিকিৎসক ও সিনিয়র স্টাফ নার্সরা জানান,নীচতলা থেকে রুগী ৪র্থ তলায় আনতে যেমন রুগী ও স্বজনদের বেগ পেতে হয় তেমনী স্টাফদেরও বিপাকে পড়তে হয়। এ দূর্ভোগ থেকে রেহাই পাচ্ছেনা হাসপাতাল পরিদর্শনে আসা জনপ্রতিনিধিরাও। স্থানীয়রা জানান,গভীর রাতে গাংনী হাসপাতালে রুগী আসলে লোকবল না থাকার কারণে নীচতলা থেকে ৪র্থ তলায় নিতে র্দীর্ঘ সময় লোকবল ধরে জোগাড় করতে হয় রুগীর স্বজনদের। দ্রত সময়ে মধ্যে হাসপাতালের বেড গুলো ২য় তলার নামিয়ে আনতে জোর দাবি করেছে ভুক্তভুগীরা। এছাড়া সমস্যা সমাধানে কোনই উদ্যোগ করছেনা বলে অভিযোগ তাদের।  জানা গেছে, ১৯৬৩ সালে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা লাভ করে। রোগীর চাহিদা বিবেচনায় ২০০৬ সালে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হয় এবং আধুনিক মানের নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হলেও নানা জটিলায় কাজ শেষ হয় ২০১৬ সালের দিকে। এরপর ২০১৭ সালে রুগীদের সেবা কার্যক্রম শুরু হয় নতুন ভবনে। হাসপাতাল সূত্রে জানান, গেছে, গাংনী হাসপাতালে ২৯ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও থাকলেও কর্মরত রয়েছে ১০ জন। অল্প সংখ্যক ডাক্তার দিয়ে ৪ লক্ষাধিক মানুষের সেবায় দিতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছে চিকিৎসকরা। এছাড়া তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেনীর পদে লোকবল সংকট তো রয়েছেই। এছাড়া মেডিসিন কনসালটেন্ড,গাইনী ও শিশু কনসালটেন্ড নেই। একারণে দুরদুরান্তে চিকিৎসা সেবা নিতে রুগীদের। এছাড়া রোগীর চাপ সামলাতে ইউনিয়ন সাবসেন্টারগুলো থেকে পালাক্রমে চিকিৎসক এনে কিছুটা সামাল দেওয়া হলেও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। গাংনী হাসপাতালে আধুনিক যন্ত্রপাতি বরাদ্দ দিলেও প্যাকেট থেকে আলোর মুখ দেখেনী। একারণে প্যাকেট থেকেই নস্ট হ”েচ্ছ মূল্যেবাদ সম্পদ। এছাড়া এক্সরে ম্যাসিন ও আলট্রাসনো ম্যাসিন নস্ট থাকায় বেশি টাকা দিয়ে ক্লিনিক থেকে প্রয়োজন মেটানো হচ্ছে। নতুন মডেলের চারতলা ভবন ও আধুনিক অপারেশন থিয়েটার থাকা সত্ত্বেও সিজারিয়ান অপারেশন দীর্ঘ ধরে বন্ধ রয়েছে। সব সমস্যা সমাধান করে দ্রত হাসপাতালের সেবার মান বৃদ্ধি করার দাবি ভুক্তভুগীদের। চিকিৎসক ও সিনিয়র স্টাফ নার্সরা গাংনী নিউজকে জানান,কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও পরিবেশ না পেলে সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে তাই। রুগীর স্বজনরা কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই কর্তব্যরত চিকিৎসক কিংবা সিনিয়রন স্টাফ নার্সদের সাথে অসাধ আচরন করে। গভীর রাতে যখন রুগী আসে কোন নিরাপত্তা কর্মী না থাকায় সেবা দিতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। এছাড়া গভীর রাত্রী পর্যন্ত রুগীর স্বজদের ভীড়ে অন্য রুগীদের সেবা ব্যাহত হয়। তাই নিদৃষ্ট সময়ে মধ্যে রুগীর স্বজনদের সাক্ষাতের দাবি জানান তারা। এসময় সকলকে ধৈয্য ধরে সেবা নেওয়ার আহবান জানান তারা। মেহেরপুরের সিভিল সার্জন ডা: শামীম আরা নাজনীন গাংনী নিউজকে বলেন,দেশের সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স্র’র একই অবস্থা আমাদের কিছুই করার নেই। তবে রুগী ও তার স্বজনদের কষ্ট হচ্ছে এটা সঠিক। গাংনী হাসপাতালার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন বলেন,৪র্থ তলায় রুগীর চিকিৎসা সেবা নেয়া কস্টসাধ্য হয়ে পড়ে। দূর্ভোগে পড়ে রুগীর স্বজন ও কর্মকর্তা কর্মচারীরা। ২য় তলায় রুগীদের সেবা দেওয়া যায় কিনা মন্ত্রনালয়ের সাথে আলোচনা করা হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন

shares
error: Content is protected !!