১৯ দিনের এতিম শিশু জান্নাতের পাশে দাঁড়ালেন ইউএনও প্রীতম সাহা 

কর্তৃক farukgangni

গাংনী নিউজ ডটকম:

গত ১৮ মার্চ রোববার সকালে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামের সেলিম রেজা ও পান্না খাতুন দম্পতির কোল জুড়ে আসে একটি কন্যা সন্তান।সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর পরিবারের সবাই ছিল আনন্দে আত্মহারা।কিন্তু সেই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।সকালে সিজার করে সন্তান হওয়ার পর সন্ধ্যায় মারা যায় মা পান্না খাতুন।রেখে যায় কন্যা সন্তান জান্নাতুলকে।মুহূর্তে আনন্দ বেদনায় পরিণত হয়।পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া।মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন পান্না খাতুনের স্বামী সেলিম রেজা সহ পরিবারের লোকজন।অবশেষে মা হারা জান্নাতের পাশে দাঁড়ালেন গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা।খাদ্য সামগ্রী সহ ঈদ উপহার দিলেন মা হারা ১৯ দিনের নবজাতক  জান্নাতকে।অসুস্থ হলে সমস্ত চিকিৎসার খরচ দেওয়ার আশ্বাসও দিলেন ইউএনও প্রীতম সাহা

স্থানীয়রা জানান,গত ১৮ই মার্চ সকালে পান্না খাতুনের প্রসব বেদনা উঠলে তাকে গাংনীর একটি প্রাইভেট হাসপাতাল নেয়ার পর সিজার করে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়।কিছুক্ষণ পরে পান্না খাতুন অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।পরে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেই দিনই রোববার সন্ধ্যায় পান্না খাতুন মারা যায়।

পান্না খাতুনের স্বামী সেলিম রেজা বলেন, আমার মা মরা শিশু জান্নাতকে নিয়ে যে কি কষ্টে আছি তা বলে বোঝানো সম্ভব না।জান্নাতের দিকে তাকালেই আমার চোখে অঝরে বৃষ্টি ঝরে।মা ছাড়া সন্তান লালন পালন করার বেদনার যে কি কষ্ট তা হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছি।এখন শিশু জান্নাতকে কোটার দুধ কিনে খাওয়াতে হচ্ছে।আজি ইউএনও মহোদয় এসেছে আমার বাড়িতে সত্যি খুব ভালো লাগছে।ঈদ সামগ্রীসহ খাদ্য সামগ্রী দিয়েছে।আমাদের চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান কমল আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছে।

তিনি আরো বলেন, আমি আমার স্ত্রীকে কোনভাবেই ভুলতে পারছিনা।আমার সাত বছরের আর একটা ছেলে সন্তান রয়েছে।আপনারা সবাই আমার দুই এতিম সন্তানের জন্য দোয়া করবেন আমি যেন তাদেরকে সঠিকভাবে লালন পালন করতে পারি।জান্নাত আমার মায়ের কাছে  থাকে।আর বড় ভাবি আছে সে সার্বিকভাবে দেখাশোনা করেন।

সেলিম রেজার মা জায়েদা খাতুন বলেন,আপনারা সবাই জান্নাতুলের জন্য দোয়া করবেন তাকে যেন সবসময় আমি ভালোভাবে রাখতে পারি।সবসময় মায়ের আদর দিয়ে রাখবো।আমার নাতনি আমার কাছে শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে থাকবে।আমার জীবনে যতই কষ্ট হোক কিন্তু সেই কষ্টের ছোঁয়া আমার নাতনির গায়ে লাগতে দেবো না।

বামন্দী ইউপি চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান কমল বলেন,আমি যতটুকু পেরেছি তাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছি।আর যখনই তার কোন সমস্যা হবে আমাকে জানালে আমি সার্বিক সহযোগিতা করবো।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা বলেন,শিশু জান্নাতের দিকে তাকালে বুকটা কষ্টে কেটে যাচ্ছে।মা ছাড়া সন্তান বড় করা যে কি কষ্ট তা বলে বোঝানো অসম্ভব।আমি সবসময় তার সার্বিক সহযোগিতা করবো।শিশু জান্নাতের জন্য  খাদ্য ও ঈদ সামগ্রী সহ উপহার দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন,প্রচণ্ড তাপদাহ আর গরমে শিশু জান্নাতের অনেক কষ্ট হচ্ছে তার জন্য একটি সোলার প্যানেল ব্যবস্থা করা যায় কিনা আমরা সেটা দেখবো।তাছাড়া শিশু জান্নাতের চিকিৎসার ব্যবস্থাও আমরা সুনজরে নিয়েছি।আর যে কোন সমস্যায় আমরা তার পাশে আছি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন

shares
error: Content is protected !!