গাংনী নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম :
মেহেরপুরের গাংনীর ভাটাপাড়া জেলা প্রশাসক ইকো পার্কে ইজারাদার ও ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। মটরসাইকেল পার্কিংকে কেন্দ্র করে শুক্রবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েকদফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে গুরুত্বর আহত হয়েছেন সাহারবাটি ইউপি ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আতাউর রহমান টোকন, নুরু ও রবিউল ইসলাম। আহতরা মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদিকে ছাত্রলীগ কর্মী গাংনী কাচাবাজার পাড়ার কামাল হোসেনের ছেলে হিরক,উত্তরপাড়ার ইয়াজ উদ্দিনের ছেলে রিপন, মহিলা কলেজ পাড়ার আঃ কাদের এর ছেলে স্বাধীন, হিজলবাড়িয়া গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ছেলে ডালিম সহ আরো কয়েকজন মারাত্বক আহত হয়েছেন। তাদের রড দিয়ে পেটানোর অভিযোগ করা হয়েছে। ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা অভিযোগ করে বলেন,মটরসাইকেল ও ভ্যান পাকিংয়ে অতিরিক্ত টাকা চাওয়া নিয়ে ইজারাদারদের সাথে ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটে। পরে সাহারবাটি এলাকাতে তাদের উপর হামলা করা হয়। পার্ক ইজারাদার কমিটির সদস্য মুকুল হোসেন জানান, ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের সাথে সামান্য ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আর কোন সমস্যা না হয় সে বিষয়ে চেষ্টা চলছে। সাহারবাটি ইউপি আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আতাউর রহমান টোকন বলেন, তাদের উপর হামলা করা হয়নী। কতিপয় মহল বিষয়টি নিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা চলছে। বরং আমি সহ আমার লোকজনই হামলার শিকার হয়েছে। আমার হাত ভেঙ্গে গেছে। এদিকে অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে পৌর ছাত্রলীগের সাধার সম্পাদক ইমরান হাবিবের নেতৃত্বে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে। মিছিলটি উপজেলা পরিষদ বাজার থেকে গাংনী বাজার বাসষ্টান্ডে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে সাহারবাটি ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুকের বিরুদ্ধে নানা শ্লোগান দেয়া হয়। এবিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক বলেন,ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা আমার ছোট ভাই। তারা ভুল বুঝেছে। আমি দিনভর কুষ্টিয়াতে ছিলাম এ ঘটনার কিছুই জানিনা। তবে উভয় পক্ষকে নিয়ে একটি গ্রহনযোগ্য সমাধান করা হবে। গাংনী থানার ওসি হরেন্দ্র নাথ সরকার বলেন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয়া হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, গাংনী উপজেলায় বিনোদনের তেমন কোন স্থান না থাকায় দুবছর আগে সাবেক খুলনা বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া ও মেহেরপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহের উদ্যোগে জেলা প্রশাসক ইকো পার্ক গড়ে তোলা হয়। তৎকালিন সময়ের গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল আমিন,প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা দিলিপ কুমার সেন ও প্রকৌশলী জাকির হোসেনের প্ররিশ্রমে বেশকিছু অবকোঠামো তৈরি করা হয়। পার্কটি স্থাপনের পর বিভিন্ন দিবস ছাড়াও প্রায় সময় পর্যটকরা বেড়াতে আসতো এ পার্কে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে বের হলেই এই পার্কে বেড়াতে আসতো কিন্তু বর্তমানে পার্কটি স্থাণীয় প্রভাবশালীদের কাছে ইজারা দেওয়ার কারণে পর্যটক শূণ্যে হয়ে পড়েছে। সরকারী কোটি কোটি টাকার সম্পদে চলছে লুটপাট আর ইজারাদারদের দৌরাত্ব। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক পর্যটক বলেন ভাটপাড়া থেকে ইংরেজ ব্রিটিশরা বিতাড়িত হলেও নতুন করে ব্রিটিশদের আমদানি করে সাধারন মানুষদের শাসন করা হচ্ছে। দ্রত পার্কটি উন্মক্ত কিংবা ইজারা প্রথা বাতিল করা না হলে সরকারের কোটি কোটি টাকার সম্পদ লোকসানে পড়বে। মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মো: আতাউল গনী বলেন,পার্ক নিয়ে প্রতিনিয়ত বিস্তর অভিযোগ আমার কাছে আসে। স্থাণীয় এক জনপ্রতিনিধির আবদার রাখতে গিয়ে পার্কের আমবাগান,কাজলা নদী ও সাইকেল গ্যারেজ ইজারা দেয়া হয়েছে। ইজারার মেয়াদ শেষ হলে সরকারী ব্যবস্থাপনায় পার্ক চলবে। তিনি আরো বলেন,ইজারাদাররা বিভিন্ন সময়ে পর্যটকদের সাথে অসাধ আচরন এমনটি তাদের মারধর করার অভিযোগও আছে। এ ধরনের অভিযোগ পুনরায় উঠলে ইজারাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরদিকে পার্কটিতে অস্থায়ী দোকানীরা বলেন,বিভিন্ন দিবসে তারা দুএকদিনের জন্য দোকান খুলে বসেন। দোকন খুলতেও ইজারাদারদের টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে বসতে দেয়া হয়না। ইজারাদারা শুধু আমবাগান,সাইকেল গ্যারেজ ও কাজলা নদী ছাড়া অন্য বিষয়ে দেখভাল করতে পারেন কিনা জানতে চাইলে পার্ক ব্যবস্থপানা কমিটির সভাপতি ও গাংনী উপজেলা নির্বহী অফিসার বিষ্ণুপদ পাল বলেন, ইজারাদারদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ আসে। দ্রত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক গাংনী উপজেলায় কর্মরত এক সরকারী কর্মকর্তা বলেন,পার্কের বাইরে দাড়িয়ে ছিলাম। মেয়েটা মটরসাইকেল থেকে নেমে পার্কেে মধ্যে দৌড় দিয়েছে। আমি মেয়েকে আনার পর দেখি ইজারাদারের লোকজন আমার মটরসাইকেরে চাকায় ভ্রমর মেরে বাতাস বের করে দিয়েছে। দুই কিলোমিটার গাড়ি ঠেলে এনে সাহারবাটিতে এসে মেরামত করা হয়েছে।