গাংনী নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম :
মেহেরপুরের গাংনীতে ঐতিহ্যবাহী ধরে রাখতে দিনব্যাপি গ্রামীন খেলাধুলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হয় চলে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। এই খেলা দেখতে সব বয়সের দর্শকরা ভীড় জমিয়েছে খেলার মাঠে।
সভ্যতার ক্রমবিকাশ আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঐহিত্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলা। গ্রামীণ খেলাধুলা নির্মল আনন্দের জীবন্ত উৎস, বিনোদনের খোরাক। আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই আজ বিলুপ্তির পথে। তারপরও গ্রামীণ জনপদে এখনও কিছু খেলাধুলা চোখে পড়লেও উৎসাহ-উদ্দীপনা ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে তাও প্রায় বন্ধ হতে চলেছে।
চেংগাড়া গ্রামের মাহবুবুর রহমান বলেন,একসময় গ্রামীণ সমাজের শিশুরা পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন খেলাধুলার মাধ্যমে অবসর সময় কাটাত। বিকাল হলেই খোলা মাঠে দল বেঁধে খেলতে যেত। শিশু মানেই দৌড়ঝাঁপ, কোলাহল আর দুরন্তপনা। দুরন্তপনা ছাড়া যেন শৈশব কল্পনাই করা যায় না। অথচ প্রযুক্তির এ যুগে শিশুদের মধ্যে, বিশেষ করে শহরের শিশুদের মধ্যে দুরন্তপনা যেন আর নেই বললেই চলে। ঘরে বসে কম্পিউটার, মোবাইলে গেমস খেলতেই তারা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। তাই এসব খেলা বাঁচাতে আলাদা ফেডারেশনের বিকল্প কিছু নাই।
গ্রামীণ খেলাধুলা আমাদের প্রাচীন ক্রীড়া সংস্কৃতি। একসময় গ্রামীণ খেলাধুলা আমাদের সংস্কৃতির ঐতিহ্য বহন করত। বর্তমানে গ্রামীণ খেলা বিলুপ্ত হতে হতে আজ তার অস্থিত্ব খুঁজে পাওয়াই কঠিন। দেশের বিভিন্ন এলাকার গ্রামাঞ্চলে একসময় প্রায় শতাধিক গ্রামীণ খেলাধুলার প্রচলন ছিল। তার মধ্যে ছেলেরা খেলত হা-ডু-ডু, ডাংগুলি, কাবাডি, লাটিম ঘোরানো, ঘুড়ি উড়ানো, নৌকাবাইচ, লাঠিখেলা, ষাঁড়ের লড়াই, মোরগ লড়াই, সহ এমনি আরও অনেক খেলা।
স্কুলপড়ুয়া ছেলেমেয়েরা স্কুলের টিফিন সময়ে নানা ধরনের গ্রামীণ খেলা নিয়ে মেতে থাকত। বর্তমানে শহরাঞ্চলে তো বটেই, গ্রামাঞ্চলেও খোলা জায়গা বা খেলার মাঠের স্বল্পতার কারণে এসব খেলা আর তেমন চোখে পড়ে না।
ছাত্রনেতা ফিরোজ আহমেদ বলেন, স্মার্ট ফোন,ল্যাপটপ ও ডেস্কটপে ভিডিও গেইমস খেলার কারণে এসব খেলা বিলুপ্তির পথে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ক্রীড়া প্রেমীরা। বর্তমানে গ্রামীন খেলাধুলা সম্পর্কে ধারণা আছে এমন শিশুর সংখ্যা নেই বললেই চলে।
চেংগাড়া গ্রামবাসির আয়োজনে জানমোহাম্মদ মিন্টুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথী হিসেবে খেলা উদ্বোধন করেন গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আব্দুর রাজ্জাক। বিশেষ অতিথী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,ষোলটাকা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার পাশা,সাহারবাটি ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান,জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি মো: শাহিদুজ্জামান শিপু। এসময় স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের পাশাপাশি সব বয়সের দর্শকরা উপস্থিত ছিলেন।