১৯ বছর পর সেই বাচেনার পেট থেকে বের করা হলো কাঁচি

কর্তৃক farukgangni

গাংনী নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম :

দীর্ঘ ১৯ বছর পর সেই বাচেনা খাতুনের পেট থেকে কাঁচি বের করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেনারেল হাসপাতালে অপারেশনের পর তার পেট থেকে কাঁচি বের করা হয়। এদিকে গাংনীর রাজা ক্লিনিকে অপারেশনের পর বাচেনা খাতুনের পেটে কাঁচি রেখে সেলাই করে দেওয়ার ঘটনা তদন্তে কাজ শুরু করেছে তদন্ত দল। তবে সঠিক তদন্ত হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে বাচেনা খাতুনের স্বজনরা।
চুয়াডাঙ্গা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারী মো: ওয়ালিউর রহমান নয়ন বলেন,বাচেনা খাতুনের পেট থেকে অপারেশনের মাধ্যমে কাঁচি বের করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি সুস্থ রয়েছে। তবে তাকে কয়েকদিন হাসপাতালে থাকতে হবে।
এদিকে বাচেনা খাতুন জানিয়েছেন,রাজা ক্লিনিকের মালিক পারভিয়াস হোসেন রাজা চিকিৎসা সব সব ধরনের ব্যয়ভারের দায়িত্ব নিলেও চুয়াডাঙ্গা আসার পর আর কেউ খোঁজ খবর নেয়নি। প্রতিবেশিদের কাছ থেকে আবারো ধারদেনা করে পরীক্ষা নিরিক্ষা সহ ঔষধপত্র ক্রয় করা হয়েছে।
পেটে কাঁচি রেখে সেলাই করে দেওয়ার ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির প্রধান গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো: আশরাফুজ্জামান লিটন বলেন,তিনি ঢাকাতে আছেন তবে তার পক্ষে একজন সহ কমিটির অন্য দুজন সদস্য বিষয়টি তদন্ত করছেন। তাদের কাছ থেকে সার্বিক বিষয়টি জেনে তার পর এবিষয়ে মন্তব্য করা যাবে।
কমিটির সদস্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারী মো: ফজলুর রহমান বলেন, অপারেশন যে রাজা ক্লিনিকে করা হয়েছে এমন লিখিত কোন তথ্য এখন পর্যন্ত দিতে পারেনি বাচেনা খাতুন কিংবা তার পরিবার। তবে তার পরিবোরের সদস্যদের কাগজ পত্র নিয়ে দেখা করতে বলা হয়েছে।
বাচেনা খাতুনের অপারেশন তার ক্লিনিকে হয়েছে এবং অপারেশনের সময় তিনি সহকারী ছিলেন বিষয়টি ডাঃ পারভিয়াস হোসেন রাজা স্বীকার করে তিনি কাঁচি বের করার সকল খরচ খরচা বহন করা হবে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করলেও তদন্ত কমিটির সদস্য’র আচরন ও কথাবার্তায় সঠিক তদন্ত হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে বাচেনা খাতুনের স্বজনরা।
মেহেরপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ জওয়াহেরুল আনাম সিদ্দিকী বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন জমা হোক। তার পর ভুক্তভুগীর পরিবার যদি তদন্ত প্রতিবেদন পক্ষপাত মুলক হয়েছে এমন দাবি করে না রাজি দিলে আবারো কমিটি করে দেয়া হবে। তবে কমিটির কোন সদস্য যদি পক্ষপাত মুলক আচরন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য : মেহেরপুরের গাংনীর রাজা ক্লিনিকে দীর্ঘ ১৯ বছর আগে পিত্তথলির অপারেশন করান চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার নওদা হাপানিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদ এর স্ত্রী বাচেনা খাতুন। অপারেশন করার পর সুস্থ্য হওয়ার কথা কিন্তু বাচেঁনা খাতুনের পেটের যন্ত্রনা দিনদিন বাড়তেই থাকে পেটের ব্যথার অসহ্য যন্ত্রনায় বছরের পর বছর বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে ছুটেছেন তিনি। খুইয়েছেন অর্থ সম্পদ সব কিছু। তবুও ভালো হয়নি।
স্থানীয়দের পরামর্শে শেষ পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজের নিউরোমেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ রেজা নাসিমের কাছে চিকিৎসা নিতে গেলে এক্স-রে করানো হয়। এক্স-রে রিপোর্টে পেটের মধ্যে ৪/৫ ইঞ্চি’র একটি কাঁচির সন্ধান মেলে।
বাচেনা খাতুনের পিত্তথলির পাথর অপারেশন ও চিকিৎসা করাতে গিয়ে শেষ সম্বল ১০ কাঠা জমি বিক্রি করতে হয়েছে বাচেনার পরিবারকে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন

shares
error: Content is protected !!