মেহেরপুরে কমছেই না করোনা আক্রান্ত ও মৃত্য’র সংখ্যা

কর্তৃক farukgangni

ফারুক আহমেদ :

দফায় দফায় লকডাউন বাড়িয়েও মেহেরপুর জেলায় কমছেনা করোনা আক্রান্ত ও মৃত্য’র সংখ্যা। জনগনের মধ্যে সচেতনতার অভাব ও প্রশাসনের যথাযথ নজরদারি না থাকার কারনে নিয়ন্ত্রনে আসছেনা করোনা সংক্রামন।
মেহেরপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে,গত ৪ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত ১০ দিন লকডাউন চলাকালে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২ হাজার ১শ’৮৩ জনের। এর মধ্যে করোনা সনাক্ত হয়েছে ৬শ’৭৮ জনের। এছাড়া ৪শ’ ৪৭ জন সুস্থ্য হলেও মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের।
অপরদিকে লকডাউন শিথিল করায় ১৪ থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত ১০ দিনে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ হাজার ৯শ’১২ জনের। এর মধ্যে করোনা সনাক্ত হয়েছে ৫শ’৮২ জনের। এছাড়া ৭শ’ ৪১ জন সুস্থ্য হলেও মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জনের।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কঠোরলকডাউন চলাকালে স্থানীয় ও দুরপাল্লার বাস চলচল বন্ধ থাকলেও স্যালো ইঞ্জিন চালিত যানবাহন,অটোবাইক,ট্রাক অবাধে চলাচল করছে। কঠোর লকডাউনের দিন যততই বাড়ছে ততই মটরসাইকেল ও ব্যাটারি চালিত পাখি ভ্যান সহ বাজার সহ রাস্তাঘাটে জনগনের চলাচল ব্যাপক হারে বাড়ছে। শহরে কিছুটা দোকানপাট বন্ধ থাকলেও গ্রামের অবস্থা পূর্বর মতই স্বাভাবিক। স্বাস্থ্যবিধি মানার বলাই নেই দোকানপাট খোলা রয়েছে চায়ের দোকান গুলোতে সকাল থেকে গভীর রাত্রী পর্যন্ত লকডাউন,করোনা ও খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে চলছে আলাপ আলোচনা। এরমধ্যে কমবেশি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হলেও লকডাউন কার্যকরে কোন কাজে আসছেনা।
মেহেরপুরের সিভিল সার্জন ডা: নাসির উদ্দীন বলেন, সকলে স্বাস্থ্য বিধি ও লকডাউন মেনে চললে করোনা সংক্রামনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। করোনা সংক্রামন রোধে স্বাস্থ্য বিভাগ প্রানপন চেষ্টা করছে। এছাড়া ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তিনি আরো বলেন,এ পর্যন্ত মেহেরপুর জেলায় করোনা পজেটিভের সংখ্যা প্রায় ৬শ’। এছাড়া ১শ’৩১ জনের মৃত্যু হলেও সুস্থ্য হয়েছে প্রায় ৩ হাজার।
এদিকে চিকিৎসক নার্স সহ অন্যান্য জনবল সংকটে সেবা ব্যহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল ২৫০ ও গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ ও মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যায় রুপান্তরিত করা হলেও জনবল বরাদ্দ দেওয়া হয়নি ফলে অর্ধেকেরও কম জনবল দিয়েই চলছে হাসপাতাল গুলো। মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্তাবধায়ক মো: মিজানুর রহমান বলেন,মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ৪২ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও কর্মরত রয়েছে ২৪ জন। এর মধ্যে মাতৃত্বকালিন সহ অন্যন্যা ছুটি রয়েছে। এছাড়া ৪র্থ শ্রেনীর ৪৩জনের পদ থাকলেও কর্মরত রয়েছে মাত্র ১৮জন।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: রাশিদুল হাসান শাওন বলেন,৩০জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলে রয়েছে মাত্র ৮জন। এর মধ্যে একজন মাতৃত্বকালিন ছুটিতে। এছাড়া হাতে গোনা কয়েকজন চিকিৎসক ও নার্স নিয়ে গাইনী ওয়ার্ড,বর্হিবিভাগ,ইনডোর,করোনা ইউনিট,টিকা কার্যক্রম চলমান রাখতে হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীরা। এছাড়া ৩য় ও ৪র্থ শ্রেনীর পদের নামমাত্র কয়েকজন কর্মরত রয়েছে। দ্রত চিকিৎসক ও নার্স পদায়ন করা হলে সেবা দিতে সুবিধা হবে।
মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মুজিবুর রহমান জানান,১৬জন চিকিৎসকের বিপরিতে কর্মরত রয়েছে মাত্র ৫জন। এছাড়া ৩য় ও ৪র্থ শ্রেনীর পদ প্রায় শুন্যে বললেই চলে।
করোনা দূর্যোগেও মধ্যেও গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আয়া সহ অন্যান্য পদে বেশ কয়েকজন সেচ্ছা শ্রমের কাজ করছে। তাদের দাবি হাসপাতালের বিভিন্ন আয়ের খাত থেকে অন্তত কিছুটা হলেও অর্থিক সুবিধা দেয়া হলে সংসারে অভাব অনটন কমে আসতো।
জেলা প্রশাসক ড.মোহাম্মদ মনছুর আলম খান বলেন,করোনা সংক্রামন রোধে প্রতিনিয়ন মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে প্রচার প্রচারনা চলছে। তিনি সকলকে মাস্ক পরিধান সহ লকডাউন মেনে চলার আহবান জানান।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন

shares
error: Content is protected !!