মেহেরপুরে সড়ক মহাসড়কে মৃত্যু’র মিছিল। দর্শকের ভুমিকায় ট্রাফিক পুলিশ

কর্তৃক farukgangni

গাংনী নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম :

মেহেরপুরে সড়ক মহাসড়কে মৃত্যু’র মিছিল। দিনের পর দিন মৃত্যু’র মিছিল দীর্ঘ হলেও ট্রাফিক পুলিশ দূর্ঘটনা রোধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা জেলায়। গত দু বছর আগে ট্রাফিক পুলিশের তাড়া খেয়ে মটরসাইকেল নিয়ে পালাতে গিয়ে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে গাংনীর ভোমরদহ গ্রামের সাবেক এক সেনা সদস্য’র মৃত্যু হয়। পরে জনরোশ থেকে বাঁচতে পালিয়ে যায় ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। এলাকাবাসির অভিযোগ মেহেরপুর সড়ক মহাসড়ক অবৈধ যান দাপিয়ে বেড়ালেও অজ্ঞাত কারনে ট্রাফিক বিভাগ নিরবতা পালন করে আসছে। অবৈধ যান চলাচল বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকলেও নেই নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ট্রাফিক পুলিশের ওসি ইসমাইলকে ম্যানেজ করেই চলছে এসব অবৈধ যান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মাইক্রোবাস চালক জানান, কাগজ পত্র ঠিক থাকলেও ট্রাফিক পুলিশকে মাসিক চাঁদা দিয়ে তাদের চলতে হয়। আলগামন চালকরা জানান,ট্রাফিক পুলিশ তাদের আটক করলেও নজরানা দিলেই ছেড়ে দেয়। কয়েকজন ইটভাটা মালিক জানান, ইটভাটা চলাকানি সময়ে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের টাকা নিয়েই লাটাহাম্বা চালানো হয়। টাকা না দিলে গাড়ী ধরে নিয়ে থানায় আটক রাখার হুমকী দেন। কয়েকজন মটরসাইকেল চালক জানান,ট্রাফিক পুলিশের ওসি ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে টিএসআই আমিরুল ইসলাম,আসাদুজ্জামান,এটিএসআই মফিদুল ইসলাম,সাত্তার অবৈধ যান আটক না করলেও কাকডাকা ভোর থেকে জেলার বিভিন্ন সড়কে মটরসাইকেল আটকিয়ে রমরমা বানিজ্য করতে থাকে। স্থানীয়রা জানায়,সড়ক মহাসড়কে জ্যাম কিংবা রাস্তার উপর কোন দূর্ঘটনা ঘটলেও কোন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদে কে দেখা যায়না। রাস্তা থেকে দূর্ঘনার শিকার যান অপসারনে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নী। এমনকি কোন ট্রাফিক বক্স্রের তাদের পাওয়া যায়না। তবে স্থানীয়রা জানান,মেহেরপুরের পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী যোগদান করার পর থেকে আইনশৃংখলার উন্নতি হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের বদলী সহ বিভিন্ন কাজে সচ্ছতা এসেছে। স্থানীয়রা জানায়, (০৯-১০-১৯ ইং) বুধবার দিবাগত সন্ধ্যায় গাংনীর পোড়াপাড়া নামক স্থানে ট্রাকের ধাক্কায় রাণী খাতুন (২৫) নামের এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। সে মেহেরপুর সদর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের নাহিদুজ্জামানের স্ত্রী। রাণী খাতুন তার শ্বশুরের মোটরসাইকেল চড়ে গাংনী উপজেলা শহর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় একটি ট্রাক মোটরসাইকেলকে ধাক্কায় দিলে ছিটকে মাটিতে পড়ে নিহত হয় সে। এদিকে গাংনীর বাওট বাজারে অদূরে (০৫-১০-১৯ ইং) শনিবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের বাওট বাজার সংলগ্ন এলাকায় ট্রাক ও হোপার (ধানমাড়াই গাড়ী) মুখোমুখি সংঘর্ষে আক্তারুল ইসলাম (৩৫) নামের এক চালক নিহত হয়েছে। নিহত আক্তারুল ইসলাম গাংনী উপজেলার হিজলবাড়িয়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে ও হোপার (ধানমাড়াইগাড়ী) চালক। এ ঘটনার পরপরই লাশের পাশ দিয়ে মেহেরপুরের ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা গেলেও উদ্ধার কিংবা ঘাতক ট্রাক আটক না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয়রা। এ নিয়ে ট্রাফিক পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় অভিযুক্ত ট্রাফিক পুলিশের কয়েকজন সদস্য’র বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা ও কৈফিয়ত তলবের নির্দেশ দেন মেহেরপুরের পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী। ভুক্তভুগিদের দাবি,মেহেরপুরের বেপরোয়া ও অবৈধ যান আটকে ট্রাফিক পুলিশ ভুমিকা রাখলে অনেকটাই দূর্ঘটনা কমে আসবে। এদিকে পাখিভ্যান ও আটোবাইকে সাদা লাইট লাগালেও এসব বন্ধে নিস্ক্রিয় ভুমিকা পালন করছে ট্রাফিক পুলিশ। মেহেরপুর ট্রাফিক পুলিশের ওসি ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা জানতে বুধবার রাত ৮টা ৩৮ মিনিটে তার মোবাইল ফোনে কথা হলে এ বিষয়ে তিনি কোন কথা বলবেন না বলে জানান। যা বলার পুলিশ সুপার বলবে বলে জানান। মেহেরপুরের পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী জানান,ইতোমধ্যে সব ধরনের অবৈধ যান আটকের অভিযান শুরু হয়েছে। সকলের সহযোগিতায় পেলে সড়ক দূর্ঘটনা কমে আসবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন

shares
error: Content is protected !!